WordPress থিম ডেভেলপার গাইডলাইন বা রোডম্যাপ

ওয়ার্ডপ্রেস বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওপেন-সোর্স কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) গুলির মধ্যে একটি। এটি ব্লগ, ই-কমার্স ওয়েবসাইট, ফোরাম, এবং আরও অনেক ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্টে আগ্রহী হন এবং WordPress দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে শিখতে চান,

A-modern-clean-and-visually-engaging-featured-image-for-an-article-about-WordPress-theme-development.-The-image-includes-elements-such-as-a-laptop-d
Overlay Image Overlay Image
A-modern-clean-and-visually-engaging-featured-image-for-an-article-about-WordPress-theme-development.-The-image-includes-elements-such-as-a-laptop-d

ওয়ার্ডপ্রেস বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওপেন-সোর্স কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) গুলির মধ্যে একটি। এটি ব্লগ, ই-কমার্স ওয়েবসাইট, ফোরাম, এবং আরও অনেক ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্টে আগ্রহী হন এবং WordPress দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে শিখতে চান, তবে এই গাইডলাইন রোডম্যাপটি আপনাকে শুরু করতে সহায়তা করবে। ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি বিষয় নিয়ে নিচে ধাপে ধাপে বিস্তারিত বলা হয়েছে।

১: HTML, CSS এবং JavaScript শেখা

WordPress শিখতে, আপনার অবশ্যই HTML, CSS এবং JavaScript জানতে হবে। এগুলো আগে জানা থাকলে এই স্টেপটি এড়িয়ে যেতে পারেন। এই স্কিলগুলো ব্যবহার করে, আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থিম এবং প্লাগিন কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এগুলো শিখতে আপনি বিভিন্ন অনলাইন টিউটোরিয়াল, বই বা কোর্স ব্যবহার করতে পারেন। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের লিস্ট দেয় হল,

  • W3Schools: HTML, CSS এবং JavaScript শেখার জন্য একটি দুর্দান্ত ওয়েবসাইট।
  • Mozilla Developer Network: HTML, CSS এবং JavaScript শেখার জন্য আরেকটি দুর্দান্ত ওয়েবসাইট।
  • Codecademy: HTML, CSS এবং JavaScript শেখার জন্য একটি ইন্টারেক্টিভ উপায়।
  • Udemy: HTML, CSS এবং JavaScript শেখার জন্য বিভিন্ন ভিডিও কোর্স পাবেন।

২: PHP শেখা

সাধারণভাবে বলতে গেলে, ওয়ার্ডপ্রেস থিম ও প্লাগিন ডেভেলপমেন্টের জন্য PHP এর নিম্নলিখিত বিষয়গুলি জানা জরুরি:

  • বেসিক পিএইচপি: PHP ফাংশন, ভেরিয়েবল, কনস্ট্যান্ট, লুপ, কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট এবং ফাইল হ্যান্ডলিং।
  • অ্যাডভান্সড পিএইচপি: PHP এর ইন্টারফেস, ক্লাস, অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং, ফাংশনাল প্রোগ্রামিং এবং অ্যাডভান্সড PHP কনসেপ্ট। থিম ডেভেলপমেন্ট শুরু করার জন্য এগুলো জানা না থাকলেও চলবে। তবে জানা থাকা ভালো। কমপ্লেক্স ফাংশনাল থিম ও ওয়েবসাইট বানাতে অ্যাডভান্সড পিএইচপি দরকার পড়বে।

আপনি যদি PHP এর এই বিষয়গুলি সম্পর্কে জানেন, তাহলে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থিম ও প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট শুরু করতে পারেন। অনলাইনে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল এবং কোর্স পাবেন যা আপনাকে এই বিষয়গুলি শিখতে সাহায্য করবে। তাছাড়া Bangatuts থেকেও আপনি সম্পূর্ণ বাংলায় পিএইচপি শিখতে পারবেন।

৩: ওয়ার্ডপ্রেসের মূলনীতি বা ইকো-সিস্টেম বুঝা

ওয়ার্ডপ্রেসের কোর বা মূল কাঠামো এবং ইকোসিস্টেম বোঝা থিম ডেভেলপমেন্টের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে অন্তর্ভুক্ত:

  • WordPress কী এবং কীভাবে কাজ করে: ওয়ার্ডপ্রেসের আর্কিটেকচার ও ফাংশনালিটি।
  • থিম ও প্লাগিন কী: থিম ও প্লাগিনের ভূমিকা ও পার্থক্য।
  • ড্যাশবোর্ড পরিচিতি: অ্যাডমিন প্যানেল ও সেটিংস।
  • ওয়ার্ডপ্রেস মাল্টিসাইট ম্যানেজমেন্ট: একাধিক সাইট পরিচালনা।
  • সাইট ব্যাকআপ ও পুনঃস্থাপন: সাইট ব্যাকআপ নেওয়া এবং তা পুনরুদ্ধারের পদ্ধতি একজন থিম ডেভলপার এর ব্যাসিক স্কিলের মধ্যে পড়ে। এটা অবশ্যই শিখে নিতে হবে।

শেখার উপায়:

  • WordPress.org: অফিসিয়াল সাপোর্ট ও ডকুমেন্টেশন।
  • WPBeginner: ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল ও গাইড।
  • Banglatuts: বাংলায় ৭০+ ধারাবাহিক আর্টিকেল নিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস এর বেসিক বা মূল বিষয়গুলো কাভার করা হয়েছে।

৪: একটি স্টার্টার থিম ব্যবহার করে শুরু করা

WordPress থিম ওয়েবসাইটের ডিজাইন নিয়ন্ত্রণ করে। থিম ডেভেলপমেন্ট শেখার একটি ভাল উপায় হল একটি স্টার্টার থিম ব্যবহার করে শুরু করা। স্টার্টার থিম হল একটি বেসিক থিম যা আপনি কাস্টমাইজ করে নিজের থিম তৈরি করতে পারেন।

জনপ্রিয় কিছু স্টার্টার থিম:

  • Underscores: ওয়ার্ডপ্রেস এর অফিসিয়াল কোম্পানি Automattic কর্তৃক তৈরি একটি স্টার্টার থিম।
  • Sage: এটি লারাভেল ব্লেড ও Tailwind CSS দিয়ে কনফিগার করা একটি স্টার্টার থিম।
  • Bones: HTML5 ভিত্তিক স্টার্টার থিম।

তাছাড়া কিছু ব্লক থিম যেমন, Twenty Twenty-Four, Twenty Twenty-Three এবং কিছু ক্লাসিক থিম Astra, Kadence, Avada, Divi ইত্যাদি নিয়ে কাজ করতে পারেন।

৫: একটি কাস্টম থিম তৈরি করা

ওয়ার্ডপ্রেসে মূলত দুই ধরনের থিম থাকে—ক্লাসিক থিম এবং ব্লক থিম। আর ব্লক থিম হল ওয়ার্ডপ্রেসের সর্বশেষ থিম সিস্টেম। ব্লক থিম মূলত ব্লক-ভিত্তিক এবং Gutenberg বা ব্লক এডিটরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিচে এই দুই ধরণের থিম নিয়ে বিস্তারিত বলা হলো।

৫.১ : ক্লাসিক থিম ডেভলপমেন্ট:

ক্লাসিক থিম ডেভেলপমেন্টের জন্য HTML, CSS, JavaScript ও PHP এর বেসিক ধারণা জানা থাকতে হবে। আপনাকে অবশ্যই PHP ফাংশন, ভেরিয়েবল, কনস্ট্যান্ট, লুপ, কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট এবং ফাইল হ্যান্ডলিং সম্পর্কে জানতে হবে। নিম্নোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত পড়াশুনা করে, প্রেক্টিসের জন্য ১-২ টি থিম তৈরি করতে পারেন।

  • থিম হায়ারার্কি: থিম স্ট্রাকচার, ফাইলস, থিমের বিভিন্ন ফাইলের ফরমেট এবং তাদের কাজ।
  • থিম ডেভেলপমেন্ট ও কোডিং স্ট্যান্ডার্ড: ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভলপের জন্য কিছু নিয়ম কানুন বা কোডিং স্ট্যান্ডার্ডস রয়েছে যা আপনার অনুসরণ করা উচিত। PHP, CSS কোডিং স্ট্যান্ডার্ড আপনার থিমের কোডকে করবে ক্লিন, রিডেবল (সহজে পড়া যায় এমন), অপটিমাইজড এবং প্রজেক্ট ম্যানেজ করা সহজ করে তোলে। তাছাড়া মার্কেটপ্লেসগুলোতে থিম পাবলিশ করতে হলে অবশ্যই তাদের কোডিং স্ট্যান্ডার্ড মেনে কোড করতে হবে।
  • টেমপ্লেট ফাইল: header.php, footer.php, single.php ইত্যাদি ফাইলের গঠন ও ব্যবহার।
  • পেজ টেমপ্লেট: কাস্টম পেজ টেমপ্লেট ও কোয়েরি-ভিত্তিক টেমপ্লেট ফাইল ।
  • হুকস এবং ফাংশনস: ওয়ার্ডপ্রেসের হুক সিস্টেম এবং ফাংশনস যা থিম ফাংশনালিটি এবং কাস্টমাইজেশন নিয়ন্ত্রণ করে।
  • কমেন্ট টেমপ্লেট: কাস্টম মার্কাপ ব্যবহার করে কমেন্ট টেমপ্লেট বানানো ও কমেন্ট ফর্মে কাস্টম ফিল্ড যোগ করা। যেমন, কমেন্ট ফর্মে একটি রেটিং ফিল্ড যোগ করতে পারেন।
  • শর্টকোড ব্যবহার ও তৈরি: WordPress-এ shortcode হলো একটি বিশেষ কোড বা ট্যাগ যা ব্যবহার করে সহজেই বিভিন্ন ফাংশন বা কন্টেন্ট যুক্ত করা যায়। থিম ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য শর্টকোড এর ব্যবহার এবং তা কিভাবে তৈরি করতে হয় তা শিখতে হবে।
  • মেটাবক্স:
    • ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়া কাস্টম মেটা বক্স তৈরি।
    • ACF, CMB2 এর মতো ফ্রেমওয়ার্ক বা প্লাগিন দিয়ে মেটা ফিল্ডস তৈরি।
    • ইউজার প্রোফাইল, কাস্টম পোস্ট টাইপ এবং ট্যাক্সোনমিতে মেটা বক্স যোগ করা।
  • সেটিংস:
    • ওয়ার্ডপ্রেস সেটিংস API দিয়ে সেটিংস পেজ তৈরি।
    • অপশন ফ্রেমওয়ার্ক (codestar, kirki ইত্যাদি)।
  • কাস্টম পোস্ট ও ট্যাক্সোনমি: নতুন পোস্ট টাইপ, ট্যাগস ও ক্যাটাগরি তৈরি।
  • নেভিগেশন মেনু :
    • Navwalker ক্লাস মডিফাই করা।
    • এবং Navwalker ক্লাস ব্যবহার করে কাস্টম নেভিগেশন মেনু তৈরির পদ্ধতি।
  • থিম নিরাপত্তা ও ডাটা স্যানিটাইজেশন: নিরাপত্তা জনিত বিষয়াবলী এবং সম্ভাব্য হ্যাকিং অ্যাটাক থেকে নিরাপদ থাকার জন্য ইউজার ইনপুট দেয়া ডাটা ক্লিন করে ডাটাবেস এ সেভ ও ব্যবহার।
  • লোকালাইজেশন ও অনুবাদ:
    • WPML বা অন্যান্য অনুবাদ প্লাগিন ব্যবহার করে ওয়েবসাইট অনুবাদ।
    • থিমকে অনুবাদের জন্য রেডি করা এবং .pot ফাইল তৈরি।
  • কোয়েরি এবং লুপ বিস্তারিত:
    • Post কোয়েরি।
    • Meta কোয়েরি।
    • Tax কোয়েরি ইত্যাদি।
    • কোয়েরি থেকে while ও for লুপ চালানো।
  • পেজ বিল্ডার ডেভেলপমেন্ট: থিমের ডেমু পেজগুলো যেন সহজে কোড লিখা ছাড়াই বানানো যায়, সেজন্য যেকোন একটা পেজ বিল্ডার ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্রি পেজ বিল্ডারগুলোর মধ্যে সবথেকে পপুলার হচ্ছে এলিমেন্টর। এজন্য কাস্টম এলিমেন্টর উইজেট তৈরির প্রক্রিয়া শিখে নিতে পারেন।
  • Ajax: এজাক্স ইউজার এক্সপেরিয়েন্স আরো ভালো ও দ্রুত ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা প্রদান করে। একটা থিমে প্রচুর এজাক্সের কাজ থাকতে পারে। তাই ওয়ার্ডপ্রেস এর ভেতরে কিভাবে এজাক্স ব্যবহার করতে হয় তা অবশ্যই শিখে নিতে পারেন।
  • চাইল্ড থিম: চাইল্ড থিম মূলত একটি মূল থিমের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। চাইল্ড থিম তৈরি ও চাইল্ড থিম দিয়ে মূল থিম কাস্টমাইজেশন করা শিখতে হবে।

শেখার উপায়:

  • WordPress Theme Handbook: অফিসিয়াল থিম ডেভেলপমেন্ট গাইড।
  • Search Google: উপরের টপিক বা টার্মগুলো লিখে গুগল, ইউটিউবে সার্চ করলে শেখার জন্য প্রচুর আর্টিকেল ও ভিডিও পেয়ে যাবেন। যেটা আপনার কাছে ভালো লাগে তা ফলো ফলো করে শিখুন। তবে একই বিষয়ের উপর একাধিক আর্টিকেল ও ভিডিও দেখার জন্য আমি রিকমেন্ড করি।

৫.২ : ব্লক থিম ডেভলপমেন্ট

ক্লাসিক থিমের অনেক কনসেপ্ট-ই ব্লক থিমে এসে পাবেন। তাই ব্লক থিম শেখার আগে ক্লাসিক থিম শিখে নিতে পারেন। ওয়ার্ডপ্রেসের ব্লক থিম তৈরি করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি জানা প্রয়োজন:

  • গুটেনবার্গ এডিটর ও ব্লক বেসড এডিটিং: গুটেনবার্গ এডিটরের কার্যপ্রণালী এবং ব্লক বেসড এডিটিং প্রক্রিয়ার সাথে পরিচিত হওয়া।
  • HTML, CSS, JavaScript: ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মৌলিক ভাষার জ্ঞান, বিশেষ করে যেগুলি থিম ডিজাইন এবং ফ্রন্টএন্ড ইন্টারঅ্যাকশনে প্রয়োজন।
  • React JS: ওয়ার্ডপ্রেসের ব্লক এডিটর, যাকে গুটেনবার্গ এডিটর বলা হয়, React JS-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি। React JS একটি জনপ্রিয় JavaScript লাইব্রেরি যা ইউজার ইন্টারফেস তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। গুটেনবার্গ এডিটরের ইন্টারফেস এবং ইন্টার‌্যাকটিভ এলিমেন্টগুলি তৈরি করতে React JS ব্যবহৃত হয়।
  • theme.json ফাইল থিমের স্টাইল, সেটিংস, এবং ব্লক কনফিগারেশন নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ব্লক টেম্পলেট এবং টেম্পলেট পার্টস: পেজ ও পোস্টের জন্য কাস্টম টেমপ্লেট।

ব্লক থিম তৈরি করার প্রক্রিয়াটি চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, কিন্তু এটি ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্টের নতুন দিক উন্মোচন করে।

শেখার উপায়:

৬: অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন

প্রাকটিসই পারফেকশন আনে। আপনি ইন্টারনেট থেকে ফ্রি HTML টেমপ্লেট ডাউনলোড করে ওয়ার্ডপ্রেস থিমে কনভার্ট করতে পারেন। এছাড়া নিজের বা পরিচিতদের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। প্রাকটিক্যাল কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে বা কোন কোম্পানিতে ইন্টার্ন হিসেবেও কাজ করতে পারেন।

কাজের সুযোগ:

  • ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম: Upwork, Freelancer, Fiverr.
  • ইন্টার্নশিপ: দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ।
  • ওপেন সোর্স কন্ট্রিবিউশন: ওয়ার্ডপ্রেস কমিউনিটিতে অবদান রাখা।

ধাপ ৭: থিম টেস্টিং ও অপটিমাইজেশন

থিম ডেভেলপমেন্টের শেষ ধাপ হলো আপনার থিমটি সঠিকভাবে পরীক্ষা ও অপটিমাইজ করা। এটি নিশ্চিত করে যে, আপনার থিম ব্যবহারকারীদের জন্য দ্রুত, নিরাপদ, এবং ব্যবহারযোগ্য। থিম বানানোর পর নিম্নোক্ত বিষয়গুলো নিশ্চিত করুন:

অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো:

  • থিম চেক, সিকিউরিটি টেস্টিং ও ডিবাগিং: Theme CheckDebug Bar প্লাগিন দিয়ে থিম টেস্টিং করে বাগ ফিক্সিং।
  • স্পিড অপটিমাইজেশন: কোড মিনিফিকেশন, ইমেজ অপটিমাইজেশন।
  • SEO ফ্রেন্ডলি থিম: সঠিক HTML স্ট্রাকচার, স্কিমা মার্কআপ।
  • রেসপন্সিভ ডিজাইন: বিভিন্ন ডিভাইসে সাইটের সঠিক প্রদর্শন।
  • এক্সেসিবিলিটি নিশ্চিত করা: সব ধরনের ব্যবহারকারী বিশেষ করে ফিজিক্যাল ডিসবিলিটি মানুষের কথা চিন্তা করে থিম ডেভেলপ করতে হলে সঠিক গাইডলাইন মেনে স্ক্রিন রিডার সাপোর্ট, কীবোর্ড নেভিগেশন, কনট্রাস্ট রেশিও নিশ্চিত করতে হবে।
  • ভ্যালিডেট কোড: আপনার সব কোড ভ্যালিড আছে কিনা তা চেক দিয়ে কনফার্ম হতে হবে এবং কোন ইস্যু থাকলে তা ফিক্স করতে হবে। এক্ষেত্রে কাজটা সহজে করার জন্য ডেমু সাজিয়ে সাজিয়ে চেক দেয়া যেতে পারে।
  • ফাইনাল টেস্টিং ও ডেপ্লয়মেন্ট: থিম বানানোর পর ডেমু ডাটা দিয়ে থিম এর ডিজাইন ও ফাংশনালিটি পরীক্ষা করে দেখতে হয়। এটাকে আবার থিম ইউনিট টেস্টও বলা হয়। সবশেষে থিম ইউনিট টেস্ট ডেটা ইম্পোর্ট, প্লাগিন কম্প্যাটিবিলিটি টেস্ট ও ব্রাউজার কম্প্যাটিবিলিটি টেস্ট করুন।
  • ডকুমেন্টেশন প্রস্তুত করা: থিমের ফিচার, ইন্সটলেশন গাইড, এবং ব্যবহার নির্দেশিকা সংবলিত ডকুমেন্টেশন তৈরি করুন। ইন্টারনেটে অনেক ফ্রি টুলস পাবেন ডকুমেন্টেশন তৈরি করার জন্য। EazyDocs বা BetterDocs ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ব্যবহার করেও সহজেই একটি ম্যানেজিবল ডকুমেন্টেশন বানাতে পারবেন।

থিম ডেভেলপমেন্টে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১: ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট শুরু করার জন্য কোন প্রোগ্রামিং ভাষা জানা প্রয়োজন?

উত্তর: HTML, CSS, JavaScript ও PHP জানা প্রয়োজন। এছাড়া ব্লক থিম ডেভেলপমেন্টের জন্য React JS শেখা সুবিধাজনক।

প্রশ্ন ২: স্টার্টার থিম ব্যবহার করা কি ভালো?

উত্তর: হ্যাঁ, স্টার্টার থিম ব্যবহার করে আপনি বেসিক স্ট্রাকচার পেয়ে যাবেন, যা কাস্টমাইজ করে নিজের থিম তৈরি করতে পারবেন।

প্রশ্ন ৩: ওয়ার্ডপ্রেস থিমের জন্য React.js কেন শিখতে হবে?

উত্তর: React.js ওয়ার্ডপ্রেস ব্লক এডিটরের ভিত্তি হওয়ায় ব্লক থিম ডেভেলপ করতে React.js জানা জরুরি।

প্রশ্ন ৪: থিম ডেভেলপমেন্টে কোন কোডিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করতে হবে?

উত্তর: ওয়ার্ডপ্রেসের অফিসিয়াল কোডিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করা উচিত।

প্রশ্ন ৫. থিম ডেভেলপমেন্টে কোন টুলস ব্যবহার করা উচিত?

উত্তর: থিম ডেভেলপমেন্টের জন্য Sublime Text, Visual Studio Code, এবং PhpStorm এর মতো কোড এডিটর ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রশ্ন ৬. থিম ডেভেলপ করার সময় কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো?

উত্তর: থিমে ওয়ার্ডপ্রেস অফিসিয়াল সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী সঠিক ডাটা স্যানিটাইজেশন এবং ইনপুট ভ্যালিডেশন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

প্রশ্ন ৭. একটি থিম কতটুকু কাস্টমাইজ করা যায়?

উত্তর: থিমের ফাইল এবং ফাংশন সম্পূর্ণ কাস্টমাইজ করা যায়; তবে থিমের মূল কাঠামো ঠিক রাখা উচিত।

প্রশ্ন ৮: কীভাবে আমার তৈরি থিম মার্কেটপ্লেসে সাবমিট করবো?

উত্তর: থিমফরেস্ট বা ওয়ার্ডপ্রেস.org এ থিম সাবমিট করার আগে তাদের গাইডলাইন ও স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে থিম প্রস্তুত করতে হবে।

৯. ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন লাগে?

উত্তর: প্রাথমিক স্কিল শিখতে ৩-৬ মাস সময় লাগতে পারে, তবে দক্ষ থিম ডেভেলপার হতে হলে নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে।

শেষ কথা

ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপার হওয়ার জন্য, প্রথমে বেসিক HTML, CSS, এবং PHP জানা জরুরি। এরপর, ওয়ার্ডপ্রেসের কোর কাঠামো বা ওয়ার্ডপ্রেস ইকো সিস্টেম বুঝা, থিম হায়ারার্কি, এবং হুকস বুঝা গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্ডপ্রেসকে আরও উন্নত করার জন্য প্রতিনিয়ত আপডেট করা হচ্ছে এবং নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হচ্ছে। বিভিন্ন প্রজেক্টে অভিজ্ঞতা অর্জন, নিজের থিম তৈরি করা, ওয়ার্ডপ্রেস কমিউনিটি এবং টিউটোরিয়ালের সাথে নিয়মিত আপডেটেড থাকা আপনার শেখার প্রক্রিয়াকে সচল রাখবে সব সময়।

Leave a Comment