পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী কাদের জন্য প্রযোজ্য? নগদ টাকা কত দেখাবেন? Estimated reading: 1 minute 23 views Contributors প্রতিবছর নভেম্বর মাসে যখন আয়কর মেলা বসে, তখন করদাতারা ব্যস্ত হয়ে পড়েন আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে। এই সময় প্রায়ই আমাকে একটি প্রশ্ন করা হয়: ট্যাক্স রিটার্নে হাতে নগদ টাকা কত দেখাবো?এটি একটি সাধারণ প্রশ্ন হলেও, এর সঠিক উত্তর জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ একটি ভুল পদক্ষেপ ভবিষ্যতে অডিটের ঝামেলার কারণ হতে পারে। এই টিউটোরিয়ালে আমরা আলোচনা করব-নগদ টাকার পরিমাণ কীভাবে নির্ধারণ করবেন। অস্বাভাবিক নগদ টাকা দেখালে কী সমস্যা হতে পারে। সাধারণ ভুলগুলি এড়াতে করণীয়। ব্যাংক ব্যালান্স কীভাবে প্রদর্শন করবেন।হাতে নগদ কত দেখাবেন?পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীতে ৩০ জুন তারিখের নগদ টাকা দেখাতে হবে। এটি অনেকটা একটি কোম্পানির ব্যালান্স শিটের মতো। ৩০ জুন তারিখে আপনার হাতে নগদ টাকা যা ছিলো, সেটি লিখতে হবে।অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, রিটার্নে অস্বাভাবিকভাবে কয়েক লক্ষ টাকা নগদ দেখানো হয়েছে। যেমন, একটি রিটার্নে ২২ লাখ টাকা নগদ দেখা গেছে। এমনকি কেউ কেউ কোটি টাকাও নগদ দেখিয়ে থাকেন। এটি বড় ভুল। অস্বাভাবিক নগদ দেখালে আয়কর বিভাগ থেকে অডিট হতে পারে, এবং তখন টাকার উৎস প্রমাণ করা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।এখানে একটি উদাহরণ দেয়া যায়, অনেকেই মনে করেন রিটার্নে বেশি নগদ দেখালে ভবিষ্যতে সুবিধা হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি বেশ বড় ঝুঁকি। একবার রিটার্নে অস্বাভাবিক কিছু দেখালে, পরবর্তীতে প্রতিবছর সেই তথ্যের ভিত্তিতে জের টানতে হবে। এমনকি আপনি চাইলেও এই তথ্য সহজে পরিবর্তন করতে পারবেন না।একটি উদাহরণ: আমি যে পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পূরণ করেছি, সেখানে নগদ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছি মাত্র ৫,৬০০ টাকা। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, আপনাকে কত নগদ দেখাতে হবে? এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার আর্থিক অবস্থার ওপর। সাধারণত, দৈনন্দিন খরচের জন্য আপনি বাসায় বা পকেটে যত টাকা হাতে রাখেন, সেটাই উল্লেখ করবেন। বর্তমান সময়ে আমরা ক্রেডিট কার্ড এবং ডেবিট কার্ড ব্যবহার করি, তাই নগদের প্রয়োজন কমই পড়ে। আর যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে ATM বুথ থেকে তা সংগ্রহ করা সম্ভব।তবে যারা ব্যবসা করেন, তাদের ক্ষেত্রে নগদ টাকার পরিমাণ বেশি থাকতে পারে। এই ধরনের ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণত নগদ টাকা বেশি থাকে না।একটি প্রশ্ন আসতে পারে যে, “৩০ জুন ২০২৪ তারিখে আমার হাতে কত টাকা ছিল তা কীভাবে বুঝব?” এর উত্তর হলো, আপনার কাছে সচরাচর নগদ যা থাকে, তার একটি আনুমানিক হিসাব করে লিখুন। তবে অবশ্যই এমন একটি পরিমাণ লিখুন যা অস্বাভাবিক না হয়।অস্বাভাবিক নগদ পরিমাণ এড়িয়ে চলুনকিছু ট্যাক্স রিটার্নে দেখা যায়, নগদের ঘরে অস্বাভাবিক পরিমাণ অর্থ দেখানো হয়—কয়েক লক্ষ বা এমনকি কয়েক কোটি টাকা। এ ধরনের অস্বাভাবিক নগদ পরিমাণ দেখানোর ফলে:অডিটের সম্মুখীন হতে পারেন। টাকার উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন উঠতে পারে। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন।উদাহরণ:একজন করদাতা রিটার্নে নগদ টাকা দেখিয়েছেন ২২ লাখ টাকা। প্রশ্ন উঠবে: এত নগদ টাকা তাঁর হাতে কীভাবে এলো?ভুল পরামর্শ এড়িয়ে চলুনকিছু মানুষ মনে করেন বেশি নগদ টাকা দেখালে পরে কাজে লাগবে। এটি একটি ভুল ধারণা। অস্বাভাবিক তথ্য প্রদর্শন করলে তা ভবিষ্যতে ঝামেলা বয়ে আনবে।মনে রাখবেন, একবার রিটার্নে ভুল বা অস্বাভাবিক তথ্য প্রদর্শন করলে, পরবর্তীতে সেই জের টানতে হবে এবং তা সহজে সমাধান করা যাবে না।তাহলে কত দেখাবেন?নগদ টাকার পরিমাণ নির্ভর করে আপনার বাস্তব পরিস্থিতির উপর। বিবেচনা করুন:দৈনন্দিন খরচ: সাধারণত সংসার খরচের জন্য আমরা হাতে কিছু নগদ টাকা রাখি। ডিজিটাল লেনদেন: অনেকেই এখন ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করেন, ফলে নগদের প্রয়োজন কমে যায়। ব্যবসায়িক কারণ: ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে নগদ টাকার পরিমাণ বেশি থাকতে পারে।নগদ টাকার আনুমানিক পরিমাণ নির্ধারণ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে আপনার হাতে নগদ কত টাকা ছিল যদি নিশ্চিত না হন, তাহলে:সাধারণত আপনার কাছে যত টাকা নগদ থাকে, সেই আনুমানিক পরিমাণ লিখুন। নিশ্চিত করুন যে পরিমাণটি অস্বাভাবিক নয়।টিপস:আপনার আয় ও জীবনযাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নগদ টাকার পরিমাণ লিখুন। অস্বাভাবিক বড় অঙ্ক এড়িয়ে চলুন।ব্যাংক ব্যালান্স কত দেখাবেন?৩০ জুন তারিখে আপনার ব্যাংক ব্যালান্স যা ছিল, তা রিটার্নে দেখাতে হবে। যদি আপনার একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে সেগুলোর সমস্ত ব্যালান্স যোগ করে দেখাতে হবে।কিভাবে ব্যাংক ব্যালান্স সংগ্রহ করবেন:আপনি যখন ট্যাক্স রিটার্ন তৈরি করবেন, তখন আপনার সমস্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ১ জুলাই ২০২৩ থেকে ৩০ জুন ২০২৪ পর্যন্ত সংগ্রহ করুন। এরপর ৩০ জুন তারিখের প্রতিটি ব্যালান্স যোগ করে তা রিটার্নে উল্লেখ করুন। এটি নিশ্চিত করবে যে আপনার ব্যাংক ব্যালান্সের তথ্য সঠিক এবং স্বচ্ছ।মনে রাখবেন:নগদ টাকার পরিমাণ এবং ব্যাংক ব্যালান্স দুটোই আলাদা আলাদাভাবে দেখাবেন। কোনো অবস্থাতেই বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করবেন না। এতে আয়কর বিভাগ থেকে প্রশ্ন উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে আইনি ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী কাদের জন্য প্রযোজ্য? - Previous স্বর্ণের পরিমাণ কতটুকু দেখাবেন? Next - পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী কাদের জন্য প্রযোজ্য? সম্পদের পরিমাণ বেশি দেখালে কোনো লাভ আছে কি?