ভূমি বিষয়ক সাধারণ ধারণা খতিয়ান ও পর্চা Estimated reading: 1 minute 15 views Contributors ভূমি ব্যবস্থাপনা ও নামজারি প্রক্রিয়ায় খতিয়ান ও পর্চা শব্দ দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই এ দুটি নথি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকার কারণে ভূমি সংক্রান্ত কাজে জটিলতার সম্মুখীন হন। এই টিউটোরিয়ালে আমরা খতিয়ান ও পর্চা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো এবং এদের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে চেষ্টা করবো।খতিয়ান কী?খতিয়ান হলো ভূমির মালিকানা, দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ এবং অন্যান্য বিবরণ সম্বলিত একটি সরকারি নথি। এটি ভূমির আইনি স্বীকৃতি প্রদান করে এবং ভূমির মালিকানা সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।খতিয়ান প্রস্তুত প্রক্রিয়াজরিপকালীন সময়ে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। মূলত তিনটি ধাপে খতিয়ান তৈরি হয়:প্রাথমিক জরিপ ও দাগ অঙ্কন: জরিপকারী দল সংশ্লিষ্ট মৌজার প্রতিটি দাগ বা প্লট সঠিকভাবে অঙ্কন করে। খসড়া খতিয়ান প্রস্তুত: দাগ অঙ্কনের পর সর্দার আমিন মৌজার সকল দাগকে বিভিন্ন খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে খসড়া খতিয়ান তৈরি করেন। চূড়ান্ত খতিয়ান প্রকাশ: খসড়া খতিয়ান ভূমি মালিকদের প্রদর্শনের পর আপত্তি থাকলে তা সংশোধন করে চূড়ান্ত খতিয়ান প্রকাশ করা হয়।খতিয়ানের বৈশিষ্ট্যআইনি নথি: খতিয়ান ভূমির মালিকানার আইনি প্রমাণ প্রদান করে। সরকারি স্বীকৃতি: এটি সরকারি রেকর্ডরুমে সংরক্ষিত থাকে এবং ভূমি মালিকদের সরবরাহ করা হয়। ফরম্যাট: বাংলাদেশ ফরম নাম্বার-৫৪৬২ (সংশোধিত) ফরমে খতিয়ান তৈরি করা হয়।খতিয়ানের কপি সংগ্রহ এবং রক্ষণাবেক্ষণখতিয়ান সংগ্রহের জন্য ভূমি মালিকদের জেলা রেকর্ডরুম বা সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়। খতিয়ান সংগ্রহের পর এটি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি জমির মালিকানা প্রমাণের প্রধান দলিল। যদি কোনো ভূমি মালিক তার খতিয়ান হারিয়ে ফেলেন বা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে তিনি নির্ধারিত ফি প্রদান করে জেলা রেকর্ডরুম থেকে খতিয়ানের একটি সত্যায়িত কপি (সার্টিফাইড কপি) সংগ্রহ করতে পারেন, যা পরবর্তীতে আইনি প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।পর্চা কী?যখন পৃথক একটি কাগজে খতিয়ানের অনুলিপি তৈরী করা হয় তখন তাকে পর্চা বলা হয়। এই অনুলিপি সাধারণত হাতে লিখে বা কম্পোজ করে তৈরী করা হয়ে থাকে। অনুলিপি যখন রেকর্ড রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হয় তখন তাকে নকল বা Certified Copy বলে। সহজ কথায় পর্চা হল হাতে লিখিত বা Compose কৃত খতিয়ানের কপি বা খসড়ার রূপ।পর্চার বৈশিষ্ট্যখসড়া নথি: এটি চূড়ান্ত নয়, বরং প্রাথমিক পর্যায়ের নথি। মালিকদের প্রদর্শন: ভূমি মালিকদের খসড়া খতিয়ান সম্পর্কে অবহিত করার জন্য সরবরাহ করা হয়। সংশোধনযোগ্য: মালিকরা আপত্তি জানালে এটি সংশোধন করা হয়।খতিয়ান ও পর্চার মধ্যে পার্থক্যখতিয়ানপর্চাচূড়ান্ত ও আইনি স্বীকৃত নথিখসড়া নথি, চূড়ান্ত নয়সরকারি রেকর্ডরুমে সংরক্ষিত থাকেমালিকদের প্রদর্শনের জন্য সরবরাহ করা হয়মালিকানার আইনি প্রমাণ প্রদান করেমালিকদের আপত্তি ও মতামত গ্রহণের জন্য ব্যবহৃতসত্যায়িত কপি সংগ্রহ করা যায়খসড়া খতিয়ানের কপি হিসেবে পাওয়া যায়গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নাবলী প্রশ্ন ১: খতিয়ান কীভাবে সংগ্রহ করবো? উত্তর: আপনি নির্ধারিত ফি প্রদান করে জেলা রেকর্ডরুম বা সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস থেকে খতিয়ানের মূল কপি বা সত্যায়িত কপি সংগ্রহ করতে পারেন। প্রশ্ন ২: পর্চা কি আইনি নথি? উত্তর: না, পর্চা খসড়া খতিয়ানের কপি যা মালিকদের প্রদর্শনের জন্য সরবরাহ করা হয়। এটি চূড়ান্ত নয় এবং আইনি স্বীকৃতি পায় না। প্রশ্ন ৩: খতিয়ান হারিয়ে গেলে কী করবো? উত্তর: খতিয়ান হারিয়ে গেলে নির্ধারিত ফি প্রদান করে জেলা রেকর্ডরুম থেকে সত্যায়িত কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রশ্ন ৪: খতিয়ান ও পর্চার মধ্যে কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ? উত্তর: খতিয়ান বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি চূড়ান্ত ও আইনি স্বীকৃত নথি। পর্চা খসড়া নথি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। খতিয়ান ও পর্চা ভূমি ব্যবস্থাপনা ও নামজারি প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি। খতিয়ান আপনার জমির মালিকানা সুরক্ষিত করে এবং আইনি প্রমাণ প্রদান করে। তাই খতিয়ান সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা এবং প্রয়োজনে তা সংগ্রহ করা জরুরি। ভূমি বিষয়ক সাধারণ ধারণা - Previous তফসিল ও এর প্রয়োজনীয়তা Next - ভূমি বিষয়ক সাধারণ ধারণা আনা-গণ্ডা-কড়া-ক্রান্তি থেকে দশমিক: জমি পরিমাপ ও হিসাবের সহজ পদ্ধতি