Comment

ট্যাক্স রিটার্নের অদ্যোপান্ত

করদায় নির্ণয় প্রক্রিয়া

Estimated reading: 1 minute 35 views Contributors

আমাদের দেশে চাকরি, ব্যবসায় বা বাড়ি ভাড়া থেকে আয় করেন এমন অসংখ্য করদাতা রয়েছেন। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা বাড়ির মালিক- এরকম বিভিন্ন স্তরের করদাতাদের করদায় নির্ণয় প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বুঝতে হলে প্রথমেই জানতে হবে কীভাবে করযোগ্য আয় নির্ধারণ করা হয়। এই টিউটোরিয়ালে আমরা ধাপে ধাপে করযোগ্য আয় নির্ধারণের পদ্ধতি শিখবো এবং কোন কোন আয় করযোগ্য হিসেবে গণ্য হবে তা ব্যাখ্যা করবো।

চাকরিজীবী করদাতাদের (সরকারি বা বেসরকারি) আয়ের উৎস বিভিন্ন হতে পারে। সাধারণত তাদের মাসিক বেতন থেকে মূল বেতন, বাড়িভাড়া ভাতা, যাতায়াত ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, উৎসব ভাতা, এবং অন্যান্য বিভিন্ন বোনাস অন্তর্ভুক্ত থাকে। তবে আয়কর আইন অনুযায়ী, কিছু আয় অব্যাহতির আওতায় পড়ে, যা করযোগ্য আয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয় না।

করযোগ্য আয় নির্ধারণের ধাপসমূহ

১. মোট আয় নির্ধারণ করা: প্রথমে করদাতার মোট বার্ষিক আয় নির্ধারণ করতে হবে। এটি করদাতার সব ধরনের আয়ের সমন্বয়, যেমন- মূল বেতন, বাড়িভাড়া ভাতা, যাতায়াত ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থ ইত্যাদি।

  1. অব্যাহতির অংশ নির্ধারণ: আয়কর আইন অনুযায়ী, কিছু আয়ের অংশ কর থেকে অব্যাহতি পায়। উদাহরণস্বরূপ:
    • বাড়িভাড়া ভাতা: নির্ধারিত সীমার মধ্যে বাড়িভাড়া ভাতা করমুক্ত হতে পারে।
    • চিকিৎসা ভাতা: নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত চিকিৎসা ভাতা করমুক্ত হতে পারে।
  2. করযোগ্য আয় নির্ধারণ: মোট আয় থেকে অব্যাহতির অংশ বাদ দিলে যে পরিমাণ আয় থাকে, সেটিই করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার মোট আয় ১০,০০,০০০ টাকা হয় এবং অব্যাহতির অংশ ২,০০,০০০ টাকা হয়, তাহলে আপনার করযোগ্য আয় হবে ৮,০০,০০০ টাকা।

করযোগ্য আয় নির্ধারণের উদাহরণ

ধরা যাক, জনাব রাকিব একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তার বার্ষিক আয়ের বিবরণ নিচে দেওয়া হলো:

  • মূল বেতন: ৬,০০,০০০ টাকা
  • বাড়িভাড়া ভাতা: ২,০০,০০০ টাকা
  • চিকিৎসা ভাতা: ৫০,০০০ টাকা
  • উৎসব ভাতা: ১,০০,০০০ টাকা

মোট আয় = (৬,০০,০০০ + ২,০০,০০০ + ৫০,০০০ + ১,০০,০০০) = ৯,৫০,০০০ টাকা।

অব্যাহতি:

  • বাড়িভাড়া ভাতা: ১,০০,০০০ টাকা (অব্যাহতি প্রাপ্ত)
  • চিকিৎসা ভাতা: ২৫,০০০ টাকা (অব্যাহতি প্রাপ্ত)

মোট অব্যাহতির অংশ = (১,০০,০০০ + ২৫,০০০) = ১,২৫,০০০ টাকা।

করযোগ্য আয় = (মোট আয় – অব্যাহতির অংশ) = (৯,৫০,০০০ – ১,২৫,০০০) = ৮,২৫,০০০ টাকা।

করযোগ্য আয় নির্ধারণের পরে এর উপর নির্ধারিত করহার প্রয়োগ করে করদায় নির্ণয় করা হয়। আয়কর আইন অনুযায়ী বিভিন্ন আয়ের স্তরের জন্য বিভিন্ন করহার প্রযোজ্য হয়। করদায় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে অব্যাহতির অংশ নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই অংশে আমরা করযোগ্য আয় নির্ধারণের পদ্ধতি শিখলাম। চাকরিজীবী করদাতাদের জন্য সঠিক করযোগ্য আয় নির্ধারণ করা কর প্রদানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে আয় ও অব্যাহতি নির্ধারণ করে করযোগ্য আয় বের করলে করদায় নির্ধারণ সহজ হয়ে যায়।


Leave a Comment

Share this Doc

করদায় নির্ণয় প্রক্রিয়া

Or copy link

CONTENTS

Subscribe

×
Cancel