Comment

ট্যাক্স রিটার্নের অদ্যোপান্ত

পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী কাদের জন্য প্রযোজ্য?

Estimated reading: 1 minute 22 views Contributors

আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় অনেক করদাতা বিভ্রান্তিতে পড়েন পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক কিনা। এই টিউটোরিয়ালে আমরা আলোচনা করব কখন এই বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক, কীভাবে এটি পূরণ করবেন এবং কী কী বিষয় বিবেচনা করবেন।

পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক কাদের জন্য?

যদি আপনার মোট পরিসম্পদের পরিমাণ ৪০ লক্ষ টাকা অতিক্রম না করে, তাহলে সাধারণত আপনাকে এই বিবরণী দাখিল করতে হবে না। নিচের যে কোনও একটি শর্ত পূরণ করলে আপনাকে বাধ্যতামূলকভাবে পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী আয়কর রিটার্টের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।

পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী শুধুমাত্র তখনই মূল রিটার্ন ফরমের সঙ্গে জমা দিতে হবে যখন নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ হয়। শর্তগুলো নিম্নরূপ:

  1. মোট পরিসম্পদ ৪০ লাখ টাকা অতিক্রম করলে – যদি আপনার মোট পরিসম্পদ (যেমন, জমি, বাড়ি, নগদ এবং ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ) ৪০ লাখ টাকা অতিক্রম করে, তাহলে এই বিবরণী জমা বাধ্যতামূলক।
  2. গণকর্মচারী হিসেবে কর্মরত থাকলে
  3. মোটর গাড়ি (জিপ বা মাইক্রোবাসসহ) মালিকানা থাকলে – কর বছরের শেষ তারিখে যদি আপনি মোটর গাড়ি, যেমন জিপ বা মাইক্রোবাসের মালিক হন, তবে এই বিবরণী পূরণ করতে হবে।
  4. সিটি কর্পোরেশন এলাকায় গৃহ-সম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করলে
  5. বিদেশে কোনো পরিসম্পদের মালিক হলে – বিদেশে যদি আপনার কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি থাকে, তাহলে এই বিবরণী জমা বাধ্যতামূলক।
  6. কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হলে

উপরের শর্তগুলোর মধ্যে কোনো একটি পূরণ করলেই আপনাকে পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিল করতে হবে।

অনিবাসী বাংলাদেশি স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা

যদি আপনি একজন অনিবাসী বাংলাদেশি স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা হন, তাহলে আপনাকে শুধুমাত্র বাংলাদেশে অবস্থিত সম্পদের তথ্য প্রদান করতে হবে।

স্বেচ্ছায় বিবরণী দাখিল

উপরের শর্তগুলোর মধ্যে কোনোটি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হলেও, আপনি চাইলে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিল করতে পারেন। তবে এই বিবরণী পূরণ করা কিছুটা জটিল হতে পারে, তাই না দেওয়াই সুবিধাজনক।

পরিবারিক সম্পদের বিবরণ

করদাতার স্বামী/স্ত্রী বা নির্ভরশীল সন্তানের নামে যদি কোনো সম্পদ থাকে এবং তাদের আলাদা টিআইএন না থাকে, তাহলে সেই সম্পদ করদাতার সম্পদের সঙ্গে যোগ করে দেখাতে হবে।

বিবরণী পূরণের সময় অতিরিক্ত পৃষ্ঠার ব্যবহার

পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পূরণের সময় যদি ছাপানো ফরমে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকে, তাহলে আপনি অতিরিক্ত কাগজে বিবরণী দিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি উল্লেখ করতে হবে:

  • করবর্ষ
  • করদাতার টিআইএন
  • ক্রমিক নম্বর
  • নাম
  • স্বাক্ষর

উদাহরণ: আপনি যদি আলাদা কাগজে সম্পদের তালিকা দেন, তাহলে প্রতিটি পৃষ্ঠায় উপরোক্ত তথ্য উল্লেখ করে স্বাক্ষর করুন।

সঠিক তথ্য প্রদান

  • যা যা সম্পদ রয়েছে তা সুনির্দিষ্ট ঘরে লিখুন।
  • কিছু ক্ষেত্রে সম্পদের মূল্য নির্ধারণে জটিলতা হতে পারে, যেমন:
    • বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মূল্য
    • কৃষি বা অকৃষি জমির মূল্য
    • স্বর্ণের পরিমাণ ও মূল্য
    • নগদ অর্থ ও ব্যাংকে জমা টাকা

পরামর্শ: সম্পদের সঠিক মূল্যায়ন করতে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী কীভাবে পূরণ করবেন?

  1. সম্পদের বিবরণ:
    • স্থাবর সম্পত্তি: জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট ইত্যাদি।
    • অস্থাবর সম্পত্তি: গাড়ি, স্বর্ণালংকার, ফার্নিচার, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি।
    • আর্থিক সম্পদ: ব্যাংক ব্যালেন্স, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার ইত্যাদি।
  2. দায়ের বিবরণ:
    • ব্যাংক ঋণ
    • ব্যক্তিগত ঋণ
    • ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া
  3. ব্যয়ের বিবরণ:
    • বার্ষিক জীবনযাপন ব্যয়
    • শিক্ষা ব্যয়
    • চিকিৎসা ব্যয়
    • অন্যান্য ব্যয়

সহায়তা: আমাদের সাইটের পরিশিষ্ট-৩ দেখুন যেখানে বিস্তারিতভাবে উদাহরণসহ বিবরণী পূরণ করা হয়েছে।

কর গণনার কাগজপত্র সংযুক্তি

আপনি যদি আলাদা করে কোনো কর বা আয় গণনার কাগজ সংযুক্ত করতে চান, তাহলে সেগুলোতেও করবর্ষ, টিআইএন, নাম ও স্বাক্ষর উল্লেখ করুন। এতে করে আপনার প্রদত্ত কাগজপত্র আয়কর কর্মকর্তার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

নিচে ফরমটি সংযুক্ত করা হলো:


Leave a Comment

Share this Doc

পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী কাদের জন্য প্রযোজ্য?

Or copy link

CONTENTS

Subscribe

×
Cancel