Comment

রিটার্ন ফরম

এক পৃষ্ঠার রিটার্ন ফরম পূরণ

Estimated reading: 1 minute 22 views Contributors

এক পৃষ্ঠার রিটার্ন ফরম কাদের জন্য প্রযোজ্য?

এক পৃষ্ঠার আয়কর রিটার্ন ফরমটি “আইটি ঘ (২০২৩)” নামে পরিচিত। এই ফরমটি পূরণ করতে পারবেন আপনার-

  1. করযোগ্য আয় ৫,০০,০০০ টাকার বেশি না হলে।
  2. মোট পরিসম্পদ ৪০ লক্ষ টাকার বেশি না হলে।
  3. কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক না হলে।
  4. কোনো মোটর গাড়ির মালিক না হলে।
  5. বিদেশে কোনো সম্পত্তি না থাকলে।
  6. সিটি কর্পোরেশন এলাকায় গৃহ সম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ না থাকলে।

উপরের শর্তগুলোর মধ্যে কোনো একটি পূরণ না হলে, আপনাকে সাধারণ ব্যক্তি করদাতা হিসেবে গন্য করা হবে। তখন আপনি এক পাতার রিটার্ন ফরম পূরণ করতে পারবেন না। আপনাকে অন্য রিটার্ন ফরম পূরণ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার করযোগ্য আয় ৫,০০,০০০ টাকা হয়, তাহলে আপনি এই ফরমটি পূরণ করতে পারবেন। কিন্তু যদি আপনার ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ থাকে, তাহলে আপনাকে সাধারণ রিটার্ন ফরম ব্যবহার করতে হবে।

এক পৃষ্ঠার রিটার্ন ফরম পূরণের প্রস্তুতি

প্রথমে আপনার সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতের কাছে রাখুন, যেমন:

  • টিআইএন নম্বর এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
  • আয়ের উৎস সংক্রান্ত তথ্য (যেমন, চাকরি থেকে আয়, ব্যবসা থেকে আয় ইত্যাদি)।
  • মোট পরিসম্পদের বিবরণ (যেমন, জমি, বাড়ি, ব্যাংক হিসাব, যানবাহন ইত্যাদি)।

এরপর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইট থেকে রিটার্ন ফরমটি ডাউনলোড করে নিন। আপনি এটি প্রিন্ট করে হাতে পূরণ করতে পারেন অথবা কম্পিউটারে পূরণ করতে পারেন। এখন প্রতিটি ধাপের মাধ্যমে ফরমটি কীভাবে পূরণ করতে হয় তা দেখানো হবে।

এক পৃষ্ঠার রিটার্ন ফরম পূরণের ধাপ

  1. ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করুন: ফরমের ১ থেকে ৭ নম্বর সিরিয়াল পর্যন্ত সাধারণ তথ্য পূরণ করুন। এতে আপনার নাম, জাতীয় পরিচয় নম্বর, টিআইএন নম্বর, কর অঞ্চল এবং আপনার ঠিকানা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। নিশ্চিত করুন যে এই তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করা হয়েছে, কারণ কোনো ভুল হলে তা রিটার্ন প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি করতে পারে।
  2. আয়ের উৎস এবং মোট পরিসম্পদ:
    • ৮ নম্বর সিরিয়াল: এখানে আপনার আয়ের উৎস লিখুন। যেমন, আপনি যদি চাকরি করেন, তাহলে “চাকরি থেকে আয়” লিখুন। ব্যবসা করলে “ব্যবসা থেকে আয়” লিখুন। নির্দিষ্ট কোনো পেশা না থাকলে এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে, “সঞ্চয়পত্রের সুদ” বা “আর্থিক পরিসম্পদ খাতে আয়” লিখুন।
    • ৯ নম্বর সিরিয়াল: আপনার মোট পরিসম্পদের পরিমাণ লিখুন। নিশ্চিত করুন যে আপনার মোট পরিসম্পদ ৪০ লক্ষ টাকার নিচে রয়েছে। জমি, যানবাহন, ব্যাংক জমা ইত্যাদি সম্পদের তালিকা তৈরি করে মোট পরিসম্পদের হিসাব করুন।
  3. মোট আয় এবং করের পরিমাণ:
    • ১০ নম্বর সিরিয়াল: আপনার মোট করযোগ্য আয়ের পরিমাণ লিখুন। করযোগ্য আয় নির্ধারণ করার সময় সমস্ত আয়ের উৎস এবং প্রযোজ্য কর অব্যাহতি বিবেচনা করুন।
    • ১১ নম্বর সিরিয়াল: মোট করের পরিমাণ লিখুন। করের ধাপ অনুযায়ী করের হার প্রয়োগ করে করের পরিমাণ বের করুন।
    • ১২ নম্বর সিরিয়াল: কর রেয়াতের পরিমাণ লিখুন। কর রেয়াত হল নির্দিষ্ট বিনিয়োগ বা দানের জন্য প্রাপ্ত কর ছাড়।
    • ১৩ নম্বর সিরিয়াল: প্রদেয় করের পরিমাণ লিখুন, যা সিরিয়াল ১১ এবং ১২ এর বিয়োগফল।
  4. উৎসে কর কর্তন এবং চূড়ান্ত পরিশোধ:
    • ১৪ নম্বর সিরিয়াল: যদি আপনার আয়ের ওপর উৎসে কর কর্তন করা হয়ে থাকে, তাহলে সেটি এখানে উল্লেখ করুন। যেমন, আপনার বেতন থেকে কর কর্তন করা হয়ে থাকলে তা এখানে লিখুন।
    • ১৫ নম্বর সিরিয়াল: অবশিষ্ট প্রদেয় করের পরিমাণ চালানের মাধ্যমে জমা দিন এবং চালানের কপি রিটার্ন ফরমের সঙ্গে সংযুক্ত করুন।
  5. জীবনযাপন ব্যয়: ১৬ নম্বর সিরিয়ালে আপনার সারা বছরের জীবনযাপন ব্যয়ের পরিমাণ লিখুন। এই ব্যয়ের পরিমাণ অবশ্যই আপনার মোট আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। জীবনযাপন ব্যয় হিসেবে পারিবারিক ব্যয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হবে।

স্বাক্ষর এবং প্রাপ্তি স্বীকার

ফরমের শেষে আপনার টিআইএন, নাম, এবং পিতা/স্বামীর নাম লিখে স্বাক্ষর করুন। আপনি এই ফরমে ঘোষণা করবেন যে উপরের তথ্য সঠিক এবং সম্পূর্ণ। রিটার্ন দাখিল করার পর আয়কর কর্মকর্তা প্রাপ্তি স্বীকার পত্রে সীল ও স্বাক্ষর করবেন, যা আপনাকে ফেরত দেওয়া হবে। এটি রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে এবং ভবিষ্যতে কোনো অডিট বা অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হতে পারে।

রিটার্ন জমা দেওয়ার পরে যা করবেন

রিটার্ন জমা দেওয়ার আগে অবশ্যই পূরণকৃত ফরম এবং সংযুক্ত কাগজপত্রের একটি ফটোকপি নিজের কাছে রেখে দিন। এটি ভবিষ্যতে রিটার্ন প্রস্তুত করতে সহায়ক হবে এবং অডিটের ক্ষেত্রে আপনার কাছে তথ্য প্রমাণ থাকবে। আশা করছি, এখন আপনি নিজেই রিটার্ন পূরণ করে জমা দিতে পারবেন।

রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • সঠিক তথ্য প্রদান করুন: সর্বদা সঠিক তথ্য প্রদান করুন। ভুল বা মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে ভবিষ্যতে জটিলতা হতে পারে এবং জরিমানার সম্মুখীন হতে পারেন।
  • রিটার্ন ফরমের সাথে সংযুক্ত কাগজপত্র: রিটার্ন ফরমের সাথে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে, যেমন-টিআইএন, চালানের কপি এবং কর রেয়াতের প্রমাণপত্র।
  • জমা দেওয়ার সময়সীমা: রিটার্ন জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। এই সময়সীমা মিস করলে জরিমানা হতে পারে, তাই সময়মতো রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন।

এই গাইড অনুসরণ করে আপনি নিজেই আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ করতে সক্ষম হবেন। যদিও এটি সহজ মনে হতে পারে, তবে এতে কিছুটা সময় এবং মনোযোগ প্রয়োজন। ধাপগুলি অনুসরণ করলে আপনার জন্য ফরম পূরণ করা সহজ হবে। যদি নিজে রিটার্ন জমা দিতে সমস্যা হয়, তাহলে কর বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে পারেন। তবে নিজের আয়কর রিটার্ন নিজে প্রস্তুত করলে আপনি আপনার আর্থিক পরিস্থিতি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং ভবিষ্যতের জন্য আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন। আপনি চাইলে নিচের ফরমটি ডাউনলোড করে পূরণ করতে পারেন।

নিচে ফরমটি সংযোজন করা হলো:

Leave a Comment

Share this Doc

এক পৃষ্ঠার রিটার্ন ফরম পূরণ

Or copy link

CONTENTS

Subscribe

×
Cancel