Comment

রিটার্ন ফরম

কেবল চাকরিজীবীদের জন্য রিটার্ন ফরম পূরণ

Estimated reading: 1 minute 25 views Contributors

রিটার্ন ফরম পূরণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা প্রতিটি করদাতার জন্য আয়ের হিসাব, সম্পদ, এবং ব্যয়ের বিবরণ প্রদান নিশ্চিত করে। এটি করদাতার আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং সরকারের কর নির্ধারণে সহায়তা করে। ট্যাক্স রিটার্ন ফরম পূরণ একটি সংবেদনশীল প্রক্রিয়া যা প্রতিটি ধাপ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পূরণ করা প্রয়োজন। করদাতাকে তার আয়ের উৎস, করযোগ্য আয়, বিনিয়োগ এবং অন্যান্য ব্যয়ের বিবরণ সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে রিটার্ন জমা দেয়ার সময় প্রাপ্তি স্বীকার পত্র সংরক্ষণ করতে হবে।

এই অধ্যায়ে বিশেষভাবে কেবলমাত্র চাকরিজীবী করদাতাদের জন্য আইটি – ১১গ(২০২৩) ফরম পূরণের বিস্তারিত প্রক্রিয়া তুলে ধরা হয়েছে। যদি আপনি বেসরকারি বা সরকারি চাকরিজীবী হন এবং শুধুমাত্র বেতন খাত থেকে আয় করেন, তবে এই গাইডটি আপনার জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে।

রিটার্ন ফরম পূরণের প্রাথমিক ধারণা

রিটার্ন ফরম পূরণের সময় করদাতাকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রদান করতে হয়। এই তথ্যগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে করদাতার ব্যক্তিগত তথ্য, আয়ের উৎস, সম্পদ এবং ব্যয়ের বিবরণ। ফরম পূরণের ক্ষেত্রে সাধারণত কয়েকটি ধাপ রয়েছে যা সঠিকভাবে পূরণ করতে হয়।

এই অধ্যায়ে আমরা কেবলমাত্র চাকরিজীবী করদাতার ফরম পূরণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। তবে অন্যান্য পেশার করদাতাদের জন্যও বিভিন্ন ধরণের রিটার্ন ফরম রয়েছে যা নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ সাপেক্ষে প্রযোজ্য হয়। উদাহরণস্বরূপ, ব্যবসায়িক করদাতার জন্য ভিন্ন ফরম এবং সম্পদধারী করদাতাদের জন্য ভিন্ন ফরম প্রযোজ্য। তবে এই টিউটোরিয়ালটি শুধুমাত্র চাকরিজীবী করদাতাদের জন্য নির্ধারিত।

ফরমের প্রাথমিক অংশ পূরণ

প্রথমে, রিটার্ন ফরমের প্রথম পাতা পূরণ করতে হবে। এখানে করদাতার সাধারণ তথ্য যেমন নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, টিআইএন, কর অঞ্চল, এবং যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। এই তথ্যগুলো ফরমের ০১ থেকে ১৩ ক্রমিক পর্যন্ত পূরণ করতে হয়। করদাতাকে তার জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন এবং ভিজিটিং কার্ড হাতে রাখতে হবে যাতে সঠিক তথ্য পূরণ করা সহজ হয়।

ফরমের ডান দিকে “আইটি – ১১গ(২০২৩)” লেখা রয়েছে, যা এই ফরমটির নাম নির্দেশ করে। এটি সকল স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার জন্য প্রযোজ্য। তবে আয়কর অফিসের জন্য সংরক্ষিত বক্সটি পূরণ করতে হবে না; এই বক্সটি আয়কর অফিস কর্তৃক রেকর্ড মেইনটেইনের জন্য ব্যবহার করা হয়।

আয় এবং করের বিবরণ

দ্বিতীয় পাতায় করদাতার আয় এবং করের বিবরণ উল্লেখ করতে হবে। প্রথমেই বেতন থেকে সারাবছরের করযোগ্য আয়ের পরিমাণ লিখতে হবে। এটি করদাতার সারাবছরের উপার্জনের হিসাব হবে, যা কর নির্ধারণে সাহায্য করবে। যদি করদাতার অন্য কোনো আয় থাকে, যেমন বাড়িভাড়া, কৃষি আয়, অথবা ব্যাংক সুদ, তবে তা যথাযথ ঘরে উল্লেখ করতে হবে। তবে যদি এসব খাত থেকে কোনো আয় না থাকে, তাহলে ফাঁকা রাখা যাবে।

আয় থেকে নির্ধারিত করহারে কর নির্ণয় করে তা ফরমে উল্লেখ করতে হবে। এরপর যদি কোনো বিনিয়োগ থাকে, যেমন জীবন বীমা, ডিপিএস, বা ভবিষ্য তহবিল, তাহলে তার ওপর কর রেয়াতের পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে। কর রেয়াত বাদ দিলে নিট করদায় নির্ণয় করা যাবে। কর রেয়াতের মাধ্যমে করদাতারা তাদের করের পরিমাণ কমাতে পারেন, যা বিনিয়োগকারী করদাতাদের জন্য একটি বড় সুবিধা।

কর পরিশোধের বিবরণ

রিটার্ন ফরমের তৃতীয় পাতায় কর পরিশোধের বিবরণ দিতে হবে। যদি উৎসে কর এবং অগ্রিম কর প্রদান করা থাকে, তবে তা যথাক্রমে ২০ এবং ২১ নম্বর ক্রমিক পূরণ করে উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া বিগত বছরে যদি অতিরিক্ত কর দেয়া থাকে, তবে তা ২২ নম্বর ক্রমিক পূরণ করে এই বছর বাদ দেয়া যাবে। এরপর যদি কোনো কর জমা থাকে, তবে তা চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে এবং সেই চালানের বিবরণ ২৩ নম্বর ক্রমিক পূরণ করে দিতে হবে।

কর পরিশোধের বিবরণে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো উৎসে কর্তনকৃত কর এবং চালানের মাধ্যমে জমাকৃত কর। এসব তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে, যাতে করদাতার কর পরিশোধের তথ্য সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়। এছাড়াও, করদাতাকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে চালান এবং অন্যান্য প্রমাণপত্র সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে, যা পরবর্তীতে প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগবে।

তফসিল এবং বিবরণী পূরণ

  • তফসিল ১: চাকরি হতে আয় — যদি করদাতা কেবলমাত্র চাকরিজীবী হন, তবে এই তফসিল পূরণ করতে হবে। এতে মূল বেতন, বাড়িভাড়া, উৎসব ভাতা ইত্যাদির বিবরণ দিতে হবে এবং অব্যাহতির পর করযোগ্য আয়ের পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে। এই তফসিল পূরণের মাধ্যমে করদাতা তার চাকরি থেকে প্রাপ্ত আয় এবং ব্যয়ের বিবরণ প্রদান করতে পারেন, যা কর নির্ধারণে সহায়ক হয়।
  • তফসিল ৫: বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত — এই তফসিলে করদাতার বিনিয়োগ বা দানের বিবরণ উল্লেখ করতে হবে। যদি কোনো বিনিয়োগ না থাকে, তাহলে এই তফসিল পূরণ করার প্রয়োজন নেই। বিনিয়োগ জনিত কর রেয়াত করদাতাকে করের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে, যা তাদের জন্য একটি বিশেষ সুবিধা।

প্রাপ্তি স্বীকার পত্র

রিটার্ন দাখিলের পর আয়কর অফিস থেকে করদাতাকে প্রাপ্তি স্বীকার পত্র প্রদান করা হয়, যা করদাতার জন্য রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই পত্রটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং যত্নসহকারে সংরক্ষণ করা উচিত। এটি লোন, ভিসা বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

এই প্রাপ্তি স্বীকার পত্রে রিটার্ন জমা দেয়ার তারিখ, করবর্ষ, করদাতার নাম, টিআইএন, মোট করদায় এবং প্রদত্ত করের বিবরণ উল্লেখ করা থাকে। করদাতাকে নিশ্চিত করতে হবে যে এই প্রাপ্তি স্বীকার পত্র সঠিকভাবে পূরণ এবং সংরক্ষণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যেকোনো প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে।

নিচে ফরমটি সংযোজন করা হলো:


Leave a Comment

Share this Doc

কেবল চাকরিজীবীদের জন্য রিটার্ন ফরম পূরণ

Or copy link

CONTENTS

Subscribe

×
Cancel