Comment

রিটার্ন ফরম

সকল ব্যক্তি করদাতার রিটার্ন ফরম

Estimated reading: 1 minute 17 views Contributors

রিটার্ন ফরম পূরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা সকল করদাতাকে আয়ের হিসাব, সম্পদ, এবং ব্যয়ের বিবরণ প্রদান করতে সহায়তা করে। এই অধ্যায়ে সকল ব্যক্তিগত করদাতার জন্য আইটি – ১১গ(২০২৩) ফরম পূরণের বিস্তারিত প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মূল আয়কর বিবরণীর সঙ্গে প্রয়োজনমতো কয়েকটি তফসিল এবং বিবরণী সংযুক্ত করতে হবে, তবে এর সবকটিই আপনার জন্য প্রযোজ্য নয়। যে তফসিল বা বিবরণী আপনার জন্য প্রযোজ্য কেবল সেগুলোই পূরণ করে মূল রিটার্ন ফরমের সঙ্গে জমা দেবেন।

রিটার্ন ফরম ডাউনলোড এবং প্রয়োজনীয় তথ্য প্রস্তুত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে আইটি-১১গ(২০২৩) রিটার্ন ফরমটি ডাউনলোড করুন। ফরমটি ডাউনলোড করতে না পারলে পরিশিষ্ট-৩-এ দেওয়া রিটার্ন ফরম দেখুন। রিটার্ন ফরম পূরণের আগে অবশ্যই আপনার আয়কর গণনা সম্পন্ন করে নিন, কেননা আয়কর গণনা ছাড়া ফরম পূরণ করা সম্ভব নয়। মূল রিটার্ন ফরম তিন পাতার। প্রাপ্তি স্বীকার পত্র এবং প্রয়োজনীয় তফসিল ও বিবরণী সংযুক্ত করতে হবে।

প্রথম পাতা: সাধারণ তথ্য

প্রথম পাতায় করদাতার সাধারণ তথ্য দিতে হবে। ফরমের ডান দিকে “আইটি – ১১গ(২০২৩)” লেখা রয়েছে, যা এই ফরমটির নাম নির্দেশ করে। এটি সকল স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার জন্য প্রযোজ্য। বাম দিকে আয়কর অফিসের ব্যবহারের জন্য একটি বক্স রয়েছে, যা পূরণ করতে হবে না। এটি আয়কর অফিস কর্তৃক রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন, এবং ভিজিটিং কার্ড।

প্রথম অংশ পূরণ:

  • ১. আপনার নাম লিখুন।
  • ২. জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করুন।
  • ৩. টিআইএন নম্বর, সার্কেল, এবং কর অঞ্চল এর নম্বর লিখুন।
  • ৪. করবর্ষ লিখুন: ২০২৩-২৪ আয়বর্ষের জন্য করবর্ষ হবে ২০২৪-২৫।
  • ৫. অন্যান্য তথ্য যেমন জন্ম তারিখ, স্বামী/স্ত্রীর নাম (প্রযোজ্য হলে) উল্লেখ করুন।
  • ৬. যোগাযোগের ঠিকানা, টেলিফোন, মোবাইল নম্বর, এবং ই-মেইল আইডি দিন। মোবাইল নম্বর অবশ্যই সেই নম্বর দিন, যা সবসময় আপনার কাছে থাকে।
  • ৭. যদি কোনো ব্যবসা থাকে তবে তার নাম এবং ব্যবসা সনাক্তকরণ নম্বর লিখুন।

দ্বিতীয় পাতা: আয় এবং করের বিবরণ

দ্বিতীয় পাতায় করদাতার আয় এবং করের বিবরণ উল্লেখ করতে হবে। শুরুতে আয় বছরের শেষ দিন অর্থাৎ ৩০ জুন ২০২৪ লিখুন। এরপর আপনার নাম এবং টিআইএন উল্লেখ করুন। তারপর নিচের টেবিলগুলোতে আপনার আয়ের বিস্তারিত বিবরণ পূরণ করুন।

প্রথম টেবিলে সিরিয়াল ১ থেকে ১০ পর্যন্ত আপনার আয়ের খাত উল্লেখ করতে হবে। মিস্টার সুলতান মাহমুদের উদাহরণ দিয়ে আমরা দেখাচ্ছি কিভাবে আয়ের তথ্য উল্লেখ করতে হবে। তিনি সরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন এবং প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখেন, তাই তার আয় খাতে চাকরি এবং পেশা থেকে আয়ের উল্লেখ করা হয়েছে।

এখানে আপনার আয় অনুযায়ী প্রযোজ্য খাতে তথ্য লিখুন এবং বাকিগুলো ফাঁকা রাখুন। এরপর নির্ধারিত করহার অনুযায়ী কর নির্ণয় করে তা টেবিলের ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর ক্রমিক অনুযায়ী পূরণ করুন। যদি আপনার কর রেয়াতের যোগ্য বিনিয়োগ থাকে, তবে তা ১৩ নম্বর ক্রমিকে উল্লেখ করুন।

তৃতীয় পাতা: কর পরিশোধের বিবরণ

তৃতীয় পাতায় কর পরিশোধের বিবরণ দিতে হবে।

  • যদি উৎসে কর এবং অগ্রিম কর প্রদান করা থাকে, তবে তা যথাক্রমে ২০ এবং ২১ নম্বর ক্রমিক পূরণ করুন।
  • যদি অতিরিক্ত কর প্রদান করা থাকে, তবে তা ২২ নম্বর ক্রমিক পূরণ করুন।
  • করদায় থেকে উৎস কর, অগ্রিম কর এবং অতিরিক্ত কর বাদ দিয়ে যা থাকবে তা চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে এবং তা ২৩ নম্বর ক্রমিক পূরণ করতে হবে।

এভাবে ২৪ নম্বর ক্রমিকে প্রদত্ত কর এবং ২৫ নম্বর ক্রমিকে করদায়ের চেয়ে বেশি হলে সেই করের পরিমাণ উল্লেখ করুন। একদম শেষ ২৬ নম্বর ক্রমিকে আপনার কর অব্যাহতি উল্লেখ করুন।

তফসিল এবং বিবরণী পূরণ

তফসিল ১: চাকরি হতে আয় যদি করদাতা চাকরিজীবী হন, তবে এই তফসিল পূরণ করতে হবে। এতে মূল বেতন, বাড়িভাড়া, উৎসব ভাতা ইত্যাদির বিবরণ দিতে হবে এবং অব্যাহতির পর করযোগ্য আয়ের পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে।

তফসিল ২: ভাড়া হতে আয় যদি গৃহ-সম্পত্তি থেকে আয় থাকে, তবে এই তফসিল পূরণ করতে হবে। এতে মোট বাড়িভাড়া, খরচ এবং করযোগ্য আয় উল্লেখ করতে হবে।

তফসিল ৩: কৃষি হতে আয় কৃষি থেকে আয় হলে তা উল্লেখ করতে হবে।

তফসিল ৪: ব্যবসায় বা পেশা হতে আয় যদি করদাতার ব্যবসা বা পেশার আয় থাকে, তবে তা উল্লেখ করতে হবে। এতে বিক্রয়/প্রাপ্তি, মুনাফা, ব্যয় এবং নিট মুনাফা উল্লেখ করতে হবে।

তফসিল ৫: বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত করদাতার বিনিয়োগ বা দানের বিবরণ এখানে উল্লেখ করতে হবে। যদি কোনো বিনিয়োগ না থাকে, তাহলে এই তফসিল পূরণের প্রয়োজন নেই।

আইটি-১০বি: পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী

পরিসম্পদ, দায়, এবং ব্যয় বিবরণী শুধুমাত্র তখনই পূরণ করতে হবে যদি করদাতার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকার অধিক হয়। এটি পূরণ করার জন্য পূর্ববর্তী বছরের রিটার্ন ফরম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় স্থানে বৃদ্ধি বা হ্রাস উল্লেখ করুন।

আইটি-১০বিবি (২০২৩): জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের বিবরণী

সারাবছরের জীবনযাপনের ব্যয় যেমন থাকা, খাওয়া, ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে। এছাড়াও উৎসে কর ও পরিশোধিত করের বিবরণ উল্লেখ করে মোট ব্যয় উল্লেখ করতে হবে।

প্রাপ্তি স্বীকার পত্র

রিটার্ন দাখিলের পর আয়কর অফিস থেকে প্রাপ্তি স্বীকার পত্র প্রদান করা হবে। এটি করদাতার জন্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে যে তিনি রিটার্ন দাখিল করেছেন। এই পত্রটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং যত্নসহকারে সংরক্ষণ করা উচিত, কারণ এটি লোন, ভিসা বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

নিচে ফরমটি সংযোজন করা হলো:


Leave a Comment

Share this Doc

সকল ব্যক্তি করদাতার রিটার্ন ফরম

Or copy link

CONTENTS

Subscribe

×
Cancel