Comment

পরিচিতি

ইউএক্স ডিজাইন

Estimated reading: 1 minute 26 views Contributors

UX ডিজাইন অথবা User Experience জিনিসটা আসলে কি? অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে থাকেন। বিশেষভাবে যারা এই ফিল্ডে একদম নতুন তাদের জন্য বিষয়টি খুব কনফিউজিং। আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করব real life example এর মাধ্যমে UX Design কি তা খুব সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করার।

৩ ইডিয়েটস এর চাত্তুর এর মত করে যদি বলি তাহলে ”ইউ এক্স ডিজাইন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোন পন্য বা পরিষেবা তৈরি করা হয় যা ইউজারের জন্য সহজ, কার্যকর এবং আনন্দদায়ক।”

আমি নিশ্চিত যে, যারা কিনা একদম প্রথমবার এর মত UX টার্ম টি নিয়ে এক্সপ্লোর করছেন তারা এই সংজ্ঞা পড়ে কিছুই বোঝেননি। এবার র‍্যাঞ্চোর মত Daily life scenario থেকে বোঝার চেষ্টা করি চলুন-

কল্পনা করুন মি. লিও নামের একজন ব্যাক্তি কোন এক সুন্দর বৃষ্টিমুখর বিকেলে তার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এক কাপ কফি খেতে চাচ্ছেন। এখন মি. লিও নিজে কফি বানিয়ে খেতে পারেন, কিন্তু হয়তোবা কফি বানানোর সব উপাদান তার কাছে মজুদ নেই অথবা কফি বানানোর মত ইচ্ছা নেই। ২য় উপায় হতে পারে- তিনি বাইরে গিয়ে কোন ক্যাফেটেরিয়া থেকে কফি খেয়ে আসতে পারেন। কিন্তু সিচুয়েশন এমন হতে পারে যে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে তার একটা অনলাইন মিটিং আছে। তাই এই মুহুর্তে তার বাইরে যাওয়াটা সম্ভব নয়। তাহলে তার কাছে সর্বশেষ উপায় বাকি থাকে অনলাইনে তার পছন্দের ক্যাফে থেকে কফি অর্ডার করে নেয়া, যাতে করে সে তার মিটিং চলাকালীন সময়ে কোন ঝামেলা ছাড়াই কফিটি উপভোগ করতে পারে।

এবার আপনি নিজেকে বিবেচনা করুন একজন UX Designer হিসেবে এবং মি. লিও হলো আপনার ইউজার। কফি খেতে চাওয়াটা হচ্ছে তার লক্ষ্য (Goal), কফি অনলাইনে অর্ডার করার জন্য যে কাজগুলো করলো ( মোবাইল হাতে নিলো, ফুড ডেলিভারি অ্যাপে প্রবেশ করলো, পছন্দ অনুযায়ী কফি অর্ডার করলো, পেমেন্ট কনফার্ম করলো এবং অ্যাপ থেকে বেরিয়ে আসলো ) এই সম্পূর্ন প্রক্রিয়াটি হলো টাস্ক। একজন UX Designer হিসেবে আপনার কাজ হচ্ছে আপনার ইউজারকে তার লক্ষ্য কত সুন্দর ও সহজভাবে অর্জন করানো যায় তার ডিজাইন করা।

অর্থাৎ UX Design হলো কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এমনভাবে সাজানো, যেন ইউজার তার লক্ষ্য বা গন্তব্যে সহজে এবং সুন্দরভাবে কোন কনফিউশন ছাড়াই পৌছাতে পারে। এক কথায় বললে, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইন হচ্ছে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ব্যবহারে ইউজারের এক্সপেরিয়েন্স কেমন হবে তা ডিজাইন করা।

এই পয়েন্টে এসেই আরেকবার কনফিউশন শুরু হয়। অনেকেই মনে করে যে শুধুমাত্র ফটোশপ, ফিগমা বা অন্য কোন ডিজাইন টুল দ্বারা ভিজুয়াল ডিজাইন করা। ধারনাটি আসলে সম্পূর্ণ ভূল।শুধুমাত্র টুলস ব্যবহার করে UI(ইউজার ইন্টারফেস) বা ভিজুয়াল ডিজাইন কেই UX Design বলা হয়না।

UI Design হলো UX এর একটি অংশ মাত্র। বলা যেতে পারে, UX Design যদি হয় মহাসমুদ্র, তাহলে UI Design হলো সেই সমুদ্রের একটি ঢেউ।

চলুন এবার তাহলে UX Design সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনে নিই। UX Design এর অনেকগুলো ধাপ রয়েছে এবং একটি ধাপ আরেকটির সাথে পুরোপুরি কানেক্টেড। কোন একটি বাদ পরে গেলে ডিজাইনটির Goal এচিভ করা ফেইল হতে পারে। সেক্ষেত্রে ডিজাইনটি সম্পূর্ণ একটি ব্যর্থ ডিজাইন হিসেবে গন্য হবে।

User Research

আপনি UX ডিজাইন করবেন, অথচ ইউজার রিসার্চ করবেন না তা কোনভাবেই সম্ভব না। একটা প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ডিজাইন করার সময় আপনাকে অবশ্যই এর ইউজারদের নিয়ে রিসার্চ করতে হবে। ইউজারের বিহেভিয়ার, চাহিদা, হতাশা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা- সবকিছু বিবেচনায় রাখতে হবে। ধরা যাক, আপনি দক্ষিণ এশিয়ার কোন এক নির্দিষ্ট পেশাজীবী মানুষদের জন্য একটি অ্যাপ ডিজাইন করবেন। কিন্তু তাদের পছন্দ, অপছন্দ, সুবিধা, অসুবিধা অভ্যাস কিছুই জানেননা, এমতাবস্থায় আপনি ফিগমা তে গিয়ে একটি ভিজুয়াল ডিজাইন শুরু করে দিলেন। সেক্ষেত্রে দিনশেষে কোন কিছু একটা ডিজাইন হবে ঠিকই কিন্তু তা হবে শুধুমাত্র A,B,C,D জেনেই শেক্সপিওরের মতো উপন্যাস লেখার চেষ্টা করার মতই অবাস্তব । যেটা আসলে ব্যবহার উপযোগী হবেনা।

উদাহরনস্বরূপ, আমরা ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সহ সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর কথা বলতে পারি। এই অ্যাপগুলোর বিভিন্ন ধরনের ইউজার রয়েছে। যেমন- এক শ্রেণীর মানুষজন আসে তাদের ছবি বা স্ট্যাটাস শেয়ার করে ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট রাখতে। আবার, অনেকে ফেসবুকে আসেন পারিপার্শ্বিক ও বৈশ্বিক খবর পাওয়ার জন্য। কেও আসে শুধুমাত্র ফ্যামিলি এবং ফ্রেন্ডস এর যোগাযোগ রক্ষার জন্য। আবার, কেও কেও আসে শুধুমাত্র এন্টারটেইনমেন্ট এর জন্য। আপনি খেয়াল করে দেখবেন ফেসবুক আমাদের বিহেভিয়ার ট্র্যাক করে, আমরা যে যেটা পছন্দ করি সেই কন্টেন্টই দেখায়। ফেইসবুক প্রতিনিয়ত ইউজার রিসার্চ করার মাধ্যমেই এত ডিফাইন্ড ভাবে আমাদের সার্ভ করতে পারছে। ফেসবুক ব্যবহার করে আমাদের এক্সপেরিয়েন্স ভাল বলেই তাদের ব্যবসা এত ভাল চলছে। তা না হলে ইউজাররা তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতো এবং ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়তো। মূলত একটি প্রোডাক্টের সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করেই ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইনের ওপর।

সেটা ডিজিটাল বা ফিজিক্যাল যে কোন ধরনের প্রোডাক্টই হোক না কেন।

Human-Centered Design

HCD হলো ডিজাইনের এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ডিজাইনাররা ইউজারের চাহিদা, আকাঙ্ক্ষা ও সীমাবদ্ধতাগুলোকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে ডিজাইন করেন। এখানে মূল লক্ষ্যই হচ্ছে এমন ডিজাইন করা যা ইউজারের জন্য কার্যকারী, উপভোগ্য এবং সহজেই ব্যবহারযোগ্য।

ডিজাইন যদি এমন হয় যে, সেটার ব্যবহার ইউজারকে নতুন করে শেখানো লাগে বা দিক নির্দেশনা দেয়া লাগে তাহলে সেই ডিজাইন ভাল ডিজাইনের পর্যায়ে পড়েনা। নিম্নের ৭ টি বিষয় মাথায় রেখে ডিজাইন করলে HCD করা যাবে খুব সহজেই। এই তত্ত্বটিকে UX Honeycomb বলা হয়।

  • Useful
  • Usable
  • Valuable
  • Desirable
  • Findable
  • Accessible
  • Credible

Problem Identify

ইউজার রিসার্চের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো প্রবলেম আইডেন্টিফিকেশন। এই ধাপে UX Designr রা ইউজারের চাহিদা, আচরন এবং সমস্যাগুলো বোঝার চেষ্টা করেন। প্রব্লেম আইডেন্টিফিকেশন ছাড়া কার্যকর কোন সল্যুশন তৈরি করা সম্ভব না।

যেই ইউজার গ্রুপের সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছেন তাদের সাথে বসতে হবে। তবেই তাদের চাহিদা, হতাশা, পারিপার্শ্বিক অবস্থান সবকিছু সম্পর্কে সঠিক ধারনা পাওয়া যাবে।

ফোকাসড গ্রুপ ডিস্কাশনের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।

  • গ্রুপের সদস্য নির্বাচনের সময় বৈচিত্র নিশ্চিত করতে হবে। যেমন ভিন্ন বয়স, লিঙ্গ, আর্থ সামাজিক অবস্থা ইত্যাদি। এতে করে ডিজাইন করার সময় Vast Community’র কথা মাথায় থাকবে।
  • গ্রুপে ৬-১০ জন মেম্বার রাখা উচিত। এই সংখ্যাটি পর্যাপ্ত ডাটা কালেকশন করার জন্য যথেষ্ঠ আবার ডিসকাশন নিয়ন্ত্রনযোগ্য রাখার জন্যও পারফেক্ট।
  • হেল্পফুল পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেন সবাই মতামত ব্যক্ত করতে স্বাছন্দ্য বোধ করে।
  • সঠিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে।
  • গ্রুপ ডিস্কাশন থেকে তথ্য সঙ্গ্রহ করতে হবে এভিডেন্স হিসেবে, যেমন ইউজাররা যখন মতামত ব্যক্ত করবে তা নোট করে রাখা, রেকর্ডিং করা বা ভিডিও করা( ইউজারের অনুমতি সাপেক্ষে)

Task Analysis

টাস্ক এনালাইসিস হচ্ছে সেই প্রসেস যেখানে আপনার সিস্টেম, সার্ভিস বা প্রোডাক্ট এর ইউজার গ্রুপ কে আপনি খুব কাছ থেকে যাচাই করতে পারবেন। ইউজার গ্রুপ এর পারসোনা (Persona) ও সিনারিও (Scenario) তৈরী করতে হয়। পারসোনা বলতে প্রতিটি ইউজার গ্রুপ এর নাম, ঠিকানা, বয়স, পেশা , কর্মস্থল, পারিবারিক অবস্থা ইত্যাদি সংগ্রহ করা কে বোঝায় এবং সিনারিও বলতে সেই ইউজার গ্রুপের জীবন বৃত্তান্ত অর্থাৎ তার প্রতিদিন কার দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থা, ও চালচলন ইত্যাদি সংগ্রহ করা ও লিপিবদ্ধ করা কে বোঝায়।

টাস্ক এনালাইসিস এর মূল উদ্যেশ্য হচ্ছে-

  • ইউজার এর মূল লক্ষ্য বা Goal টা কি সেটা জানা
  • টাস্ক বা কাজ সম্পাদন করতে গিয়ে তারা কি কি বাঁধার সম্মুখীন হয়।
  • ইউজার সেই গোল বা লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য কি কি টাস্ক বা কাজ সম্পাদন করে তা পর্যবেক্ষন করা
  • ইউজার এর পারিপার্শিক অবস্থা সেই গোল বা লক্ষ্যে পৌছানোর সময় কেমন প্রভাব ফেলে তা লক্ষ্য করা।
  • গোল বা লক্ষ্যে পৌছানোর সময় ইউজার এর আগের অভিজ্ঞতার কোনো প্রভাব আছে কি না তা দেখা।

Card Sorting

ইউজার গ্রুপের সব ধরনের প্রবলেম আইডেন্টিফাই করার পর অনেক সময়ই গোলকধাঁধায় পড়ে যেতে হয় যে, “এত এত সমস্যার মধ্যে আসলে কোন সমস্যাগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমন কোন সমস্যা আছে কিনা যেটা সমাধান করলেই অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।” হ্যা, এই সমস্যার সমাধান করা হয় কার্ড সর্টিং এর মাধ্যমে। কার্ড সর্টিং হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে ইউজারদের একটি প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা সিস্টেমের তথ্য বা বিষয়বস্তুকে তাদের নিজস্ব শ্রেণীবিভাগে সাজানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। কার্ড সর্টিং প্রধানত ২ ধরনের।

Open Card Sorting: এই পদ্ধতিতে ইউজারদের কোন নির্দিষ্ট শ্রেনীবিভাগ বা ধারনা দেয়া হয়না। তারা নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী শ্রেনীবিভাগ করতে স্বাধীন থাকে।

Closed Card Sorting: এই পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট কিছু সমস্যার সেট ইউজারদের হাতে দেয়া হয়। তারা এই অপশনগুলো থেকে যেকোনো একটি বেছে নেয়।

Wireframe

ওয়্যারফ্রেম হলো UI ডিজাইনের একটি প্রাথমিক অবকাঠামো। এটি একটি Conceptual লেআউট, যা UI এর মূল উপাদানগুলোকে প্রদর্শন করে। ওয়্যারফ্রেমে কোনো রঙ, টাইপোগ্রাফি বা অন্যান্য ভিজ্যুয়াল উপাদান থাকে না। এর উদ্দেশ্য হলো UI এর কাঠামো ও কার্যকারিতা পরীক্ষা করা।

আমরা অনেকেই UI (User Interface) ডিজাইন করার সময় প্রথমেই কোনো টুল বা সফটওয়্যার দিয়ে ডিজাইন করা শুরু করে দেই। কিন্তু এর ফলে আমাদের অনেক রকমের সমস্যায় পড়তে হয়। বার বার আমাদের নানারকম অংশ পরিবর্তন-পরিবর্ধন করতে হয়। কিন্তু যদি প্রথমেই পেন্সিল দিয়ে খাতায় সম্ভাব্য UI এর একটি স্কেচ করে নেয়া যায় যা থেকে খুব সহজেই মুছে বা এঁকে পরিবর্তন করা যাবে তাহলে কাজটা আরো সহজ হয়ে যায়।

ওয়্যারফ্রেমের সুবিধা:

  • ওয়্যারফ্রেম ব্যবহার করলে, আমরা খুব সহজেই কোনো পরিবর্তন করতে পারি।
  • এতে আমাদের কাজ অনেক সহজ ও দ্রুত হয়ে যায়।
  • ওয়্যারফ্রেম তৈরি করার সময়, আমরা শুধুমাত্র মূল লেআউট ও বিষয়বস্তু বিবেচনা করি। এতে আমাদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
  • ওয়্যারফ্রেম তৈরির পর, আমরা সেটি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত ডিজাইন তৈরি করতে পারি।

Prototype

একটি সার্ভিস, সিস্টেম বা প্রোডাক্ট এর user experience (UX) যাচাই করার জন্য সেই প্রোডাক্টের মূল লক্ষ্যবস্তু বা target user group কে বেছে নিতে হয়। আপনি যেই ইউজারদের জন্য আপনার প্রোডাক্টটি ডিজাইন করছেন, একমাত্র তাদের দ্বারাই সেই প্রোডাক্টের UX যাচাই করা সম্ভব।

তবে, শুধুমাত্র যাচাইয়ের জন্য সম্পূর্ণ প্রোডাক্টটি ডিজাইন করে তা ডেভেলপ করে ব্যবহারকারীর কাছে যাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ কাজ। তাই প্রোটোটাইপিংয়ের মাধ্যমে এই কাজটি করা হয়।

প্রোটোটাইপ হলো একটি প্রাথমিক মডেল যা একটি প্রোডাক্ট বা সিস্টেমের কার্যকারিতা এবং ব্যবহারযোগ্যতা পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।এটিতে কোনো কালার, গ্রাফিক্স বা টেক্সট ব্যবহৃত হয় না। প্রোটোটাইপ তৈরি করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো:

  • মূল প্রোডাক্টটির Usability যাচাই করা।
  • ইউজারদের কাছ থেকে ফীডব্যাক সংগ্রহ করা।
  • প্রোডাক্টটির সম্ভাব্য সমস্যাগুলি চিহ্নিত করা।

প্রোটোটাইপ তৈরি করতে আপনি কাগজ, পেন্সিল, কম্পিউটার টুলস বা মাল্টিমিডিয়া টুলস ব্যবহার করতে পারেন। কাগজ-পেন্সিল দিয়ে তৈরি প্রোটোটাইপকে পেপার প্রোটোটাইপ বলা হয়। এটি তৈরি করা সহজ এবং কম সময় সাপেক্ষ। তবে, এটিতে কালার, গ্রাফিক্স বা টেক্সট ব্যবহার করা যায় না। কম্পিউটার টুলস বা মাল্টিমিডিয়া টুলস দিয়ে তৈরি প্রোটোটাইপকে ডিজিটাল প্রোটোটাইপ বলা হয়। এটিতে কালার, গ্রাফিক্স এবং টেক্সট ব্যবহার করা যায়। তবে, এটি তৈরি করা পেপার প্রোটোটাইপের তুলনায় বেশি সময়সাপেক্ষ।

ইউএক্স ডিজাইনে হিউরিষ্টিক নীতি

ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইন করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে ডিজাইন করতে হয়। এই নিয়মগুলোকে বলা হয় হিউরিষ্টিক নীতি (heuristic principles)। এই নীতিগুলো ১৯৯৪ সালে Jakob Nielsen প্রণয়ন করেন।

কোনো প্রোডাক্ট, সিস্টেম বা সার্ভিস এর ডিজাইন যদি হিউরিষ্টিক নীতিগুলো মেনে ডিজাইন করা না হয়, তাহলে সেই ডিজাইন বাস্তবে ইউজারের ডিমান্ড পূরণ করবে না। অর্থাৎ, তা হবে একটি ব্যর্থ ডিজাইন। চলুন সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক হিউরিষ্টিক নীতিগুলো কি

  • Visibility of system status: ইউজারকে অবশ্যই জানতে হবে যে, সিস্টেমটি তার কোন কাজটি করছে।
  • Match between system and real world: সিস্টেমের নিয়ম-কানুনগুলো বাস্তব জগতের সাথে মিলে থাকতে হবে।
  • User control and freedom: ইউজার এর অবশ্যই সিস্টেমের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাধীনতা থাকতে হবে।
  • Consistency and standards: সিস্টেমের নিয়ম-কানুনগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মানসম্মত হতে হবে।
  • Error prevention: ইউজার এর ভুলের মাত্রা যেন সর্বনিম্ন হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • Recognition rather than recall: ব্যবহারকারীকে অবশ্যই সিস্টেমের নিয়ম-কানুনগুলো মনে রাখলেই হবে না, বরং সেগুলোকে সহজেই চিনতেও হবে।
  • Flexibility and efficiency of use: ইউজার যেন সিস্টেমটি সহজেই ব্যবহার করতে পারে এবং তা তার জন্য কার্যকর হয়।
  • Aesthetics and minimalist design: সিস্টেমের ডিজাইনটি সুন্দর এবং সহজ হতে হবে।

ইউজার এক্সপেরিয়েন্স যাচাইয়ের জন্য প্রোটোটাইপিং একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। প্রোটোটাইপ তৈরি করে তা ইউজার গ্রুপের কাছে পরীক্ষা করে প্রোডাক্ট বা সিস্টেমের UX উন্নত করা যায়। এছাড়াও, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইন করার ক্ষেত্রে হিউরিস্টিক নীতিসমূহ মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।হিউরিস্টিক প্রিন্সিপালগুলি মেনে চললে খুব সহজেই একটি ইউজার ফ্রেন্ডলি ডিজাইন তৈরী করা সম্ভব।

User Interface Design

ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন, সংক্ষেপে UI ডিজাইন, হলো কোনো প্রোডাক্ট, সিস্টেম, ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা যেকোনো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সাথে ইউজারের যোগাযোগের ডিজাইন। এটি ইউজারকে কীভাবে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে হবে, কোথায় কী আছে এবং কীভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে হবে তা বুঝতে সাহায্য করে।ইউ এক্স ডিজাইন এর মোটামুটি সবথেকে শেষ কাজটিই হচ্ছে ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন করা। ইউজার কে যাচাই বাছাই করার পরে- তাদের চাহিদা, প্রত্যাশা, সামর্থ্য, পারিপার্শিক অবস্থা ও তাদের মূল সমস্যার সমাধান ও তাদের সব রকমের ইনফরমেশন হাতে নিয়ে ডিজাইন করলে সেই ডিজাইন ব্যার্থ হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যায়।

সহজ কথায়, UI ডিজাইন হলো সেই সবকিছু যা আপনি দেখতে পান এবং সরাসরি ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারেন। এতে রয়েছে:

  • লেআউট: স্ক্রিনের উপর বিভিন্ন এলিমেন্টের অবস্থান।
  • কালার ও গ্রাফিক্স: আকর্ষণীয় ও ইউজার ফ্রেন্ডলি, ইউজারের এটেনশন পাওয়ার জন্য কালার, আইকন, ছবি ইত্যাদি ব্যবহার।
  • টাইপোগ্রাফি: লেখার ফন্ট, সাইজ, ওয়েট ইত্যাদির মাধ্যমে তথ্য স্পষ্টভাবে উপস্থাপন।
  • ইন্টারঅ্যাকটিভ এলিমেন্ট: বাটন, লিংক, ফর্ম ইত্যাদি ব্যবহারকারীকে প্ল্যাটফর্মটির সাথে যোগাযোগ করতে দেয়।

ভালো UI ডিজাইন একটি প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা সিস্টেমের সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভালো UI ডিজাইন ব্যবহারকারীদের আরও বেশি করে আকর্ষণ করে, তাদের কাজ সহজ করে এবং তাদের সামগ্রিক অভিজ্ঞতাকে উন্নত করে। আরও জানতে,,,,,,


Leave a Comment

Share this Doc

ইউএক্স ডিজাইন

Or copy link

CONTENTS

Subscribe

×
Cancel